প্রফেসরদের মেইল করা

পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর প্রফেসরদের মেইল করা শুরু হয়। অনেকে বলেন,
* বেশি তরুণ আর বেশি বয়স্ক প্রফেসরদের মেইল করা উচিৎ নয়।
* অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসরদের কাছে বেশী ফান্ড থাকে।
* যারা মাত্র ফ্যাকাল্টিতে যোগ দিয়েছেন, এমন ফ্রেশ প্রফেসরদের কাছে ফান্ড বেশি থাকে।
* Adjunct এবং Emeritus প্রফেসরদের কাছে ফান্ড থাকে না। তাই উনাদের মেইল না করাই ভালো।

সব শর্ত মিলিয়ে ঝিলিয়ে আপনিই ঠিক করে নিন আপনার প্রায়োরিটি।

প্রফেসররা যদি আপনার প্রথম মেইলের রিপ্লাই না দেন, তাহলে নিরাশ হবেন না। যদি উক্ত ডিপার্টমেন্টের অন্য একজনকে আপনার মনে ধরে, তাহলে প্রথমজনকে মেইল পাঠানোর ৬/৭ দিন পর দ্বিতীয়জনকে মেইল করুন। আর যদি ওয়ান এন্ড অনলি প্রফেসর “X”কেই মন প্রাণ সঁপে দিয়ে থাকেন, তাহলে প্রথম মেইলের ৬/৭ দিন পর আবারো উনাকে মেইল করুন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আপনার মেইল উনি মিস করে গেছেন বা অন্যান্য মেইলের ভিড়ে আপনার মেইল চাপা পড়ে গেছে। এজন্য একটু বিরতির পর আবার চেষ্টা করা উচিৎ।

আমি একজন প্রফেসরকে দু’দুবার মেইল করার পর উনার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি আমাকে ভুলেন নাই। দুই মাস পর আমাকে রিপ্লাই দিয়েছেন। আরেকজন দেড়মাস পর দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “Many apologies, I just came across your e-mail while cleaning up my files, I am afraid I misfiled it when it came in.”

একই ডিপার্টমেন্টের একাধিক প্রফেসরকে একই সময়ে মেইল দেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে মতভেদ আছে। তবে নিরাপদ থাকার জন্য একসাথে কয়েকজনকে মেইল না দেওয়াই ভালো। প্রথমজনকে মেইল দিয়ে ৬/৭ দিন অপেক্ষা করুন। এর মধ্যে রিপ্লাই না পেলে দ্বিতীয়জনকে করুন। উনিও যদি উত্তর না দেন তাহলে তৃতীয়জনকে করুন বা আবার প্রথমজনকে নক করতে পারেন।

যখন কেউ প্রফেসর খুঁজে, তখন ভার্সিটির ওয়েবসাইটে প্রফেসরের যে বায়োডাটা দেওয়া থাকে, সেখানে আগে চোখ বুলায়। অনেক সময় ঐ রেজুমেটি হালনাগাদ নাও থাকতে পারে। হয়তো সেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে করা রিসার্চের উল্লেখ নেই। তাই “ঐ প্রফেসর রিসার্চে সক্রিয় নন” সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আগে “X research” লিখে গুগল করে নিন (এখানে X = প্রফেসরের নাম)। প্রফেসরদের সমস্ত কাজ অনেক সময় ResearchGate, PubMed, Google Scholar Citation ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।

মেইল করার সময়ঃ
অধিকাংশ পরামর্শদাতা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১১টা হলো আমেরিকায় মেইল করার উত্তম সময়। আবার অনেকে বলেছেন রাত ৮ টা থেকে ১০ টার ভেতরেই মেইল করে ফেলতে। তাই আপনি এই দুটো সময় সহ অন্যান্য সময়েও মেইল দিয়ে চেক করতে পারেন যে, কোন সময়ে রিপ্লাই ভালো পাচ্ছেন।

মেইলের ফরম্যাটঃ
প্রফেসরকে দেওয়া মেইলের অনেক ফরম্যাট আছে। এই সাইটেই একটা ফরম্যাট দেয়া আছে, যাতে নিজের ইনফো দিলেই চিঠিটা প্রস্তুত হয়ে যায়। এছাড়া নেটে খুঁজলেও হাজার হাজার ফরম্যাট পাওয়া যাবে। নীচে আমার ব্যবহৃত ফরম্যাটটি দিলাম। কয়েক জায়গা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই জগাখিচুড়িটি পাকিয়েছিলাম।

Subject: Prospective Graduate (PhD) student for Fall 2015

Dear Professor B,
I am N from Bangladesh. I have completed my Masters from University of X in Food and Nutrition with CGPA 0.00/4.00. I wish to apply for PhD in Nutrition at R University on fall 2016.

I am very much interested in A research. I am keen to develop effective interventions for the treatment and prevention of A, and optimize wellness. I have read your articles regarding A, B, C.

I did my under graduate research on D. I did my internship to determine the nutritional and biochemical status of patients with A and D. I also have practical experiences based on wet and dry lab.

I would be happy to know the opportunities to pursue my PhD under your expert supervision. I am attaching my CV for your kind consideration.

Best Regards,
Ms N
Bangladesh.

উপরের ফরম্যাটটি একটি সাধারণ ফরম্যাট। আপনার ইন্টারেস্ট একটা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের উপর না হয়ে একাধিক ক্ষেত্রের উপর হতে পারে। তখন ইন্টারেস্ট অনুযায়ী মেইলের বডি পরিবর্তিত হবে। প্রফেসরকে এপ্রোচ করার ভঙ্গিও পাল্টে যাবে। ইমেইল লিখতে গেলে নিজেই বুঝবেন, কীভাবে লিখলে প্রফেসরের মনোযোগ সহজে আকর্ষণ করা যাবে। তবে কোনো ফরম্যাটই অন্ধভাবে অনুসরণ করবেন না। অবশ্যই আপনার নিজের আইডিয়া কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত একটা সাবজেক্ট আর বডি বানিয়ে নেবেন। এবং খেয়াল রাখবেন যেন মেইল বড় না হয়ে যায়। ছোট ছোট তিনটা বা চারটা প্যারাই স্ট্যান্ডার্ড।

মন্তব্য

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।