আমেরিকার উল্টোরথ – রাগিব হাসান
লিখেছেন – রাগিব হাসান (লেখকের অনুমতি সাপেক্ষে প্রকাশ করা হলো)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করতে আসার আগে এক জায়গা থেকে ভারতীয়দের তৈরী করা একটি টিপস্-সাজেশন নোট (বুয়েটিয় পরিভাষায়, “চোথা”) পেয়েছিলাম, যার বিষয়বস্তু ছিলো কী করে ভারতীয়রা যারা পড়তে বা চাকরিতে যাচ্ছে, তারা ওখানে খাপ খাওয়াবে। ওখানে একটা পরামর্শ ছিলো, ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন কাজ যেভাবে করা হয়, এখানে অনেক কিছুই পুরাপুরি তার উল্টা ভাবে করা হয়।
আমি ভেবেছিলাম চাপা। রাস্তায় গাড়ি ডানদিকে চলে, এটা তো ছোট বেলা থেকেই নাইট রাইডার সিরিজ দেখে শেখা। কিন্তু অন্য আর কী হতে পারে?
এখানে এসে দেখলাম, ঘটনা সত্যি। প্রথম কয়েকদিন ডিপার্টমেন্টের করিডোরে হাঁটার সময় বিভিন্ন মানুষের সাথে ধাক্কা লাগার উপক্রম। তার পর বুঝলাম, হাঁটার সময়ও ডান দিকে করে চলতে হবে, আমি অভ্যাস বশত বাঁ দিকেই হাঁটছিলাম।
রাস্তা পার হবার সময় দেশে বলা হয়, ডানে বামে তাকাতে। কারন দেশে রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ি তো ডান দিক থেকেই আসবে। এখানে উল্টা, আগে বামে, তারপর ডানে। (আমার এক মার্কিনী বন্ধুকে বলেছিলাম, ও বললো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন সেনারা যারা ইংল্যান্ডে পোস্টেড ছিলো, তাদের অনেকেই শুরুতে খালি গাড়ি চাপা পড়তো। কারণ এটাই)।
এর পর ধরা যাক বাতির সুইচ। যথারীতি উপরে উঠালে জ্বলে, নীচে নামালে নিভে। প্লাগ পয়েন্টে ৩ পিন থাকলে আর্থের পিনটি নীচের দিকে।
ঘরের চাবি। দেশে সাধারনত খাঁজ কাটা অংশটা নীচে রেখা চাবি ঢুকাই, তাই না। এখানে তার উল্টা।
এক মাস কাটিয়ে দেশ থেকে ফিরে এসে প্রথম বার গাড়ি চালাতে গিয়ে অস্বস্তি হচ্ছিলো একটু। যাক অল্প পরেই আবার উল্টো রথের দেশে মানিয়ে গেছি।
(প্রথম প্রকাশ – সামহয়ারইনব্লগ – ফেব্রুয়ারি, ২০০৭; সচলায়তন – জুন, ২০০৭)
আমি যদি ইউএস যাই গ্রেজুয়েশন করতে আমি কি গ্রেজুয়েশন বা মাস্টার্স শেষ করে ইমিগ্রেন্ট হতে পারব আর আমি কি পরার পাশাপাশি কাজ করতে পারব